জেনে নিন রান্নাঘরের রোজকার ব্যবহৃত জিনিস গুলির গুনাগুন

এখানে রান্নাঘরের রোজকার ব্যবহৃত কিছু জিনিস এর গুনাগুন তুলে ধরলাম

রান্নাঘরের রোজকার ব্যবহৃত জিনিস

হলুদঃ-

হলুদের বৈজ্ঞানিক নাম কারকিউমা লঙ্গা। হলুদের মধ্যে কারকিউমিন নামে এক যৌগ থাকে। হলুদের ওষুধের গুনের নেপথ্যে আছে এই কারকিউমিন এর জীবাণুনাশক ক্ষমতা। হলুদে লোহা থাকে প্রচুর পরিমানে।গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও হলুদ কার্যকারী ভুমিকা পালন করে , হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন ক্যানসার, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগেরও রোগ প্রতিরোধ করে। রান্নায় হলুদের ব্যবহারও যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। এই ব্যাবহার শুধু তরকারিতে রং আনার জন্য নয়। হলুদ হজমের সহায়ক। এটি মানুষের শরীরের পিত্তথলিকে  পিত্ত উৎপাদনে উদীপ্ত করে। ফলে পিত্তরস নিঃসরণ হয় যা চর্বি জাতীয় খাদ্যকে হজম করায়। হলুদের আরও একটি ব্যাবহার  প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে তা, হল খাদ্য সংরক্ষণ । আবার হলুদ মিশ্রিত বহ প্রসাধনী বাজারে বিক্রি হয়। মুখের ব্রণ ও ফুসকুড়ি সারাতেও হলুদ অদ্বিতীয়।

আদাঃ-

শরীরের পক্ষে আদা ভীষণ উপকারী। কারন আদা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তলে। জ্বর হলে বা কাঁচা সর্দিতে আদা খুবই কাজে দেয়। সে ক্ষেত্রে আদার রস হালকা গরম করে তার সঙ্গে মধু মিশিয়ে রোজ সকালে এক চা চামচ করে যদি খাওয়া যায় তাহলে তা খুবি উপকারী।  শীতকাল জুড়ে এটি বাচ্চাদের খাওয়ানো জেতে পারে। তাতে তাদের ঠাণ্ডা লাগবে না। কাঁচা আদাও আমাদের শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী কাঁচা আদা বিভিন্ন জীবাণু মেরে ফেলতে সাহায্য করে। ফলে তা গ্যাস অম্বল পেট ব্যাথা ইত্যাদিতে ভীষণ ভাবে কাজ করে। শুধু ক্যানসার প্রতিরোধে নয় ক্যানসারের চিকিৎসাতেও আদার প্রচুর অবদান। মধু বা তুলসী পাতার রসের সঙ্গে আদা খেলে সবচেয়ে ভালো এছারা আদার রস সব ধরনের ব্যাথাতেই কাজ করে। বিশেষত হাঁটুর ব্যাথা ও হাড়ের ব্যাথায়  আদার রস লাগালে তা তাড়াতাড়ি কমে যায়।

লেবুঃ-

আমাদের নিত্য দিনের খাদ্য তালিকায় পাতি লেবু, গন্ধরাজ লেবু বা কাগজি লেবু খুবই জনপ্রিয়। সাস্থ সচেতন মানুষ নিয়ম করে প্রতিদিন সকালবেলায় লেবুর রস খান। লেবুর মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট ,ভিতামিন সি,ক্যালসিয়াম প্রভৃতি থাকায় এর ওষুধ গুন প্রচুর। পাতি লেবু, গন্ধরাজ লেবু বা কাগজি লেবু আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে খুব সাহাজ্য করে। লেবুর পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিতামিন সি ছোট বড় সবারই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। মনে রাখতে হবে মানব দেহ কিন্তু ভিতামিন সি উৎপাদন করতে পারে না। তাই লেবু থেকে প্রাপ্ত ভিতামিন সি শরীরের পক্ষে  অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লেবুতে থাকা ভিতামিন সি বিভিন্ন অসুখ বিসুখ যেমন সর্দি-কাশি, হাঁচি প্রভৃতি ভাইরাসের নিউক্লিক অ্যাসিডকে নষ্ট করে দেয়। ত্বক ও চুলের সমস্যার ক্ষেত্রে লেবুর রস উপকারী আমাদের শরীর ঘাম থেকে যে দুর্গন্ধ বের হয়,নিয়মিত লেবু খেলে তা অনেকটাই কমে যায়।

পিয়াজঃ-

পিয়াজের, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস সব এক সঙ্গে পাওয় জায়। তাই পিয়াজ আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। পিয়াজ আবার গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। পিয়াজে প্রচুর পরিমানে জল থাকে তাই অতিরিক্ত গরমে পিয়াজ খেলে তেষ্টা মেটে এছাড়া অসম্ভব রোদে পিয়াজ খেতে বলা হয় তাহলে সানস্ট্রোক হয় না। ছয় থেকে সাত বছরের বাচ্ছাকে কাচা পিয়াজ খাওয়ানো যেতে পারে তবে একটু একটু সইয়ে নিতে হবে। রোজ পরিমান মতো পিয়াজ খাওয়া গেলে শরিরে অনেক রোগ কমে।

কাচালঙ্কাঃ-

লঙ্কা বিভিন্ন ধরনের এন্টিঅক্সিডেন্ট সম্রিদ্ধ। এতে ভিতামিন এ, বিটা ও আলট্রা ক্যারোটিন, ক্যাপসানথিন প্রভৃতি প্রচুর পরিমানে রয়েছে। লঙ্কার একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ হল হৃদযন্ত্রের সমস্যা উচ্চরক্তচাপ  প্রভৃতি রোগ নিরাময়ে ভুমিকা নেয়। বিশেষ করে ছোটদের সর্দি-কাশি হাঁচি লেগেই থাকে। লঙ্কায় পর্যাপ্ত পরিমানে ভিতামিন সি, থাকার জন্য এটি বিভিন্ন সংক্রামক রোগের হাত থেকে বাচায়। শরিরের পক্ষে কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো না সব জিনিসের ভালো দিক যেমন আছে তেমন খারাপ দিক আছে লঙ্কার ক্ষেত্রেও তা অন্যথা নয়।

রশুনঃ-

রশুনের অনেক ভালো গুন আছে।দিনে ১ কোয়া কাঁচা রশুন খেলে শরীরের পক্ষে ভালো  রশুনে শরীর গরম করে এই ধারনা সম্পূর্ণ ভুল।রশুনে শরীর আলাদা করে গরম করে না। সাধারন ভাবে রশুনের প্রচুর গুন।এই যেমন রশুন ফুসফুসে সর্দি জমতে দেয় না।নিয়মিত রশুন খেলে লাংস ভালো থাকে। রশুনে রক্ত পরিষ্কার হয়।শরীরে রক্ত চলাচল ভালো করতেও সাহায্য করে। বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরধেই রশুন উপকারি।

তবে কারো শরীরে কোন অসুবিধা থাকলে অবশ্যই এক্সপার্টদের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।

সংগ্রিহিত- সুখী গৃহকোণ।

পটলের কোর্মা – ঘরোয়া অনুষ্ঠানে ভাতের সাথে অসামান্য রেসিপি

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x