গরমের ছুটিতে দাদুর বাড়ি চাঁদপুর গ্রামে গিয়েছিলাম । ছোটবেলা থেকে বাবার মুখে শুনেছি ভূতের সঙ্গে দাদুর অনেক ঘটনা আছে বিশেষ করে দাদুর ভূতুড়ে ছড়ি নিয়ে। আমার অনেক দিনের ইচ্ছা দাদুর সঙ্গে ভূত দেখবো । দাদুর বাড়ি পৌছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেল, সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পড়া লম্বা চওড়া চেহারার এক বয়স্ক ভদ্রলোক আমাকে জড়িয়ে ধরলো – বাবা বললেন ‘ইনিই তোমার রাঙা দাদু’ । রাতের খাওয়া সেরে, দাদুকে বললাম চলো – ভূত দেখবো ।
দাদু আওয়াজ দিলেন – এই কে আছিস, আমার ছড়িটা নিয়ে আয় তো । আওয়াজ শুনেই বারান্দার এক কোন থেকে ছড়ি হাতে একজন এগিয়ে এলো – ও মা গো এ কে ? ভূত ভূত বলে, আমি চিৎকার করে উঠলাম । রোগা পাতলা ভংঙ্কর চেহারার এই ভূত আসলে, দাদুর চাকর ‘গদাই’, দাদু বললেন ও গদাই – ভূত নয় । এরপর দাদু আমার হাতে একটা ছড়ি দিয়ে বললেন, এটা একটা ভূতের ছড়ি । আমি হাতে ধরতেই ছড়িটা – দড়ি হয়ে গেল, আমি ভয়ে ছুড়ে ফেলে দৌড়ে ঘড়ে পালালাম ।
মায়ের পাশে শুয়ে এক ঘূমেই সকাল । সকালে ভয়ে ভয়ে দাদুর পাশে রাখা ছড়িটায় আবার হাত দিলাম, কিন্তু ছড়ি তো দড়ি হল না । পাশ থেকে দাদু বললেন – কি রে ভূত দেখতে যাবি না ? আমার কাছে আরো অনেক ভূতের জিনিষ পত্র আছে । আমি জিজ্ঞাসা করলাম – তুমি কোথায় পেলে এসব কিছু ? দাদু বললেন ওনার এক ভূত বন্ধু তাকে দিয়েছেন । তোকে ভূতের দেওয়া একটি উপহার আমি দেবো, সাবধানে রাখবি, মন দিয়ে পড়াশুনা করবি – তা না হলে ভূত বেরিয়ে আসবে । আরো বললেন – যখন বড় হবি তখন খুলে দেখবি, ঠিক আছে ?
আজ বারো বছর পর – খুলে দেখি, ওটা একটা ম্যাজিক দড়ি, যেটাকে দাদু ছড়ি বলে ভয় দেখিয়েছিল ।
কলমেঃ- আরিয়ান পাল