পাঁচ বিঘা জমির ওপর চৌধুরী বাবুর বাংলো বাড়ি । পেশায় জজ উপেন্দ্র চৌধুরীর সবচেয়ে প্রিয় জায়গা, ওনার সাধের ব্যাল্কনি । যদিও বর্তমানে মেয়ে রুমকি চৌধুরী বেশীরভাগ সময় কাটান ওই ব্যাল্কনিতে। সকালে ঘুম থেকে উঠে দোলনায় বসে চা না খেলে রুমকির সারাটা দিন ভালো লাগে না । সোশাল সাইন্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রুমকির স্বপ্ন সোশাল ওয়ার্কার হওয়ার । মায়ের অসমাপ্ত ইচ্ছাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছাই রুমকির প্রেরনা ।
পঞ্চাশের বেশী ক্রিমিনাল্ কে এ পর্যন্ত উপেন্দ্র চৌধুরী কঠোর দণ্ডে দণ্ডিত করেছেন । তারাই ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছিল স্ত্রী রাজেশ্বরী চৌধুরী কে । যদিও উপেন্দ্র বাবু জানেন একটি অ্যাকসিডেন্ট ওনার স্ত্রীর প্রান কেরে নিয়েছে । ইসমাইল নামের এক কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠনের নেতাকে জাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন । Indian Inteligent ডিপার্টমেন্টের থেকে গোপন সুত্রে খবর আসে রুমকিকে কিডন্যাপ করে ইসমাইলের মুক্তিপণ দাবি করবে ।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে IPS অফিসার রাজ সিংহকে ভার দেওয়া হয় চৌধুরী পরিবারকে রক্ষা করার কাজে । সবকিছুই চৌধুরী বাবুর অজান্তেই হতে থাকে । রাজ কোলকাতা থেকে শিলিগুরি আসে অপারেশ্ন শিলিগুরি নিয়ে । অল্পদিনের মধ্যেই প্রত্যেকটা অপারেশন সাকসেসফুল হওয়ায় ডিপার্টমেন্টের নং -১ অফিসার , ক্ষতন্যাক রাজ সিংহ । পরিচিত মুখ না হলেও , নামটা খুবই পরিচিত অপরাধ জগতে ।
রাজ শিলিগুরি পৌঁছে , থানায় যাওয়ার পথে রুমকিকে চায়ের পেয়ালা হাতে দোলনায় দুলতে দেখতে পায় । তখনও রাজ জানেনা যে রুমকি ও তার পরিবারকেই রক্ষার কাজে সে এখানে এসেছে । কারন সে সব ঘটনা শুনলেও , তাদের ফটো লোকাল থানাতেই আছে বলে জানিয়েছিল । সিগন্যালে গাড়ি দাঁড়ালে রাজ রুমকিকেই দেখতে থাকে । থানাতে ফটো হাতে পেয়ে রুমকির ফটো দেখে তার ইচ্ছাটা আরও বেরে যায় ।
এদিকে জঙ্গি সংগঠনের ছেলেরা রুমকির সাথে বন্ধুত্ব করে সোশাল ওয়ার্কের কাজের জন্য তাদের সাথে যোগ দিতে বলে । রুমকি নিজের অজান্তেই ক্লেজ ও বিভিন্ন জায়গায় অপরাধ মুলক কাজ করতে থাকে। রাজের কাছে খবর আসে রুমকির এসব সোশাল কাজের ব্যাপারে । রাজ সরকারের কাছ থেকে স্পেশাল পার্মিশন চায় কাছে থেকে রুমকিকে ও তার পরিবারকে রক্ষা করার জন্য ।স্পেশাল পার্মিশন পায় , কলেজে Admission নিয়ে আসে নিউ স্টুডেন্ট রাজ সিংহ । রাজ বিভিন্ন ভাবে রুমকিকে সাহায্য করতে থাকে তার পাপ কাজের ফল থেকেও । জঙ্গি দলের ছেলেরা লক্ষ করে রুমকির বেষ্টফ্রেন্ড বা সর্বক্ষনের জন্য রাজের সাথে থাকছে । রাজকে খেলার মাঠে নিমন্ত্রণ জানায় , অন্যভাবে সবার সামনে মারার জন্য, কিন্তু খেলার মাঠে হারাতে পারেনা । বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় অ্যাটাক করে রাজকে , একটি পুরানো বাড়ির ব্যালকনিতে এসে পৌছায় । সেখানে এসে রাজ এবং রুমকি জানতে পারে জঙ্গি সংগঠনের ব্যাপারে ও তাদের মিশনের ব্যাপারে । তাদের বাড়ির নকশা , অ্যাটাকের ছকও দেখতে পায় । রুমকি নিজের করা অপরাধ সম্পর্কেও জানতে পারে । কেঁদে ফেলে রুমকি , সম্পর্ক গভীর হয় রাজের সঙ্গে। রাজ ও নিজের অজান্তে রুমকিকে ভালবেসে ফেলে ।
রাজ ভারাবারির আশেপাশের লোকদের হেল্প করায় সে খুব পরিচিত । কলেজ পড়তে এসেছে বলেই এলাকার সবাই জানে । রাজের সাথে মেয়ের ঘনিস্ট সম্পর্কের কথা জানতে পেরে ব্যালকনি ও কলেজে যেতে আপ্ততি জানায় । ডাক্তার , পুলিশ , অ্যাডভোকেট – এঈ ধরণের ছেলের সাথে সম্পর্ক থাকলে তার আপত্তি ছিলনা বলে জানায় । রাজ এখনও কলেজে পড়ে আর কলেজ শেষ হলেই রুমকিকে বিয়ে দেবেন বলে জানান । রামকি বাবাকে সবকিছু জানায় , তার মাকে প্ল্যান করে মেরেছিল ব্যালকনি থেকে ফেলে টা ও জানায় এবং রাজ তাকে কি ভাবে সাহায্য করেছে তা ও জানায় । রাজ না থাকলে যে রুমকি এত দিনে কিডন্যাপ হয়ে যেত তা চৌধুরী বাবুর মনে হতে থাকে । চৌধুরী সরকারের কাছে আবেদন জানায় তার এবং তার পরিবারের সুরক্ষার জন্য। জানানো হয় যথা সময়ে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে, উনি যেন কোনোচিন্তা না করেন । এদিকে ইসমাইল জেল থেকে ট্রান্সফার হওয়ার প[থে পালায় ।চৌধুরী থানায় ফোন করে জানতে পারে ইসমাইল পালিয়েছে । গাড়ি নিয়ে বেরোতে যায় রুমকিকে কলেজ থেকে নিয়ে আসতে কিন্তু ইসমাইল বাড়ীতেই চলে আসে । চৌধুরীকে ব্যালকনিতে বেঁধে রেখে থানায় ফোন করে বলে তার সমস্ত সঙ্গীদের ছেড়ে দিতে । আরও জানায় তারা রুমকিকেও ধরে নিয়ে যাচ্ছে , লোক পাঠিয়ে দিয়েছে ।রুমকি ও রাজকে কলেজ থেকে ধরে ইসমাইলের লোকরা । রাজ নিজে থেকেই ধ্রা দেয় ইসমাইলকে ধ্রার জন্য । জুট মিলে রুমকি ও রাজকে আটকে রাখলেও তারা সেখান থেকে বেরিয়ে যায় । রাজ থানায় ফোন করে, পুলিশ নিয়ে আসতে বলে , রুমকির বাড়ির দিকে যায় , দীর্ঘ অ্যাকশনের পর চৌধুরীকে উদ্ধার করে ইসমাইলকে জেলে পাঠায় । সরকার থেকে চৌধুরীর কাছে ফোন আসে IPS অফিসার রাজ সিংহকে পাঠানো হয়েছিল তাদের সুরক্ষার জন্য । চৌধুরী রাজকে স্যালুট করে ব্যালকনি থেকে ।
কলমেঃ- অমিত পাল
অসাধারন